Skip to Content

শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা কী | শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনার প্রকারভেদ এবং তাদের সুবিধা ও অসুবিধা গুলি আলোচনা কর | Discus the meaning of educational management | Discus it's types with merits and demerits|

2 September 2025 by
শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা কী | শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনার প্রকারভেদ  এবং তাদের সুবিধা ও অসুবিধা গুলি আলোচনা কর | Discus the meaning of educational management | Discus it's types with merits and demerits|
Notesmentor
| No comments yet


শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা:

 শিক্ষাগত ব্যবস্থা হলো সাধারণত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সুশৃংখল এবং সফলভাবে পরিচালনা করার পদ্ধতি। অর্থাৎ শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে পরিকল্পনা, কর্মী সংগঠন এবং নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাদান, সম্প্রসারণমুলক কাজ এবং গবেষণার মত কার্যাবলীকে কার্যকরী ও দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করা হয়।


শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনার প্রকারভেদ:- 

 এই শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনাকে নেতৃত্ব দানের উপর ভিত্তি করে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে যথা- 

1) Aurthocratic management ( স্বৈরাচারী / এক নায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা ): 

স্বৈরাচারী ব্যবস্থাপনা মূলত নেতাকেন্দ্রিক একটি পদ্ধতি, যেখানে প্রতিষ্ঠানের সমস্ত ক্ষমতা একজন ব্যক্তি ভোগ করে অর্থাৎ সমস্ত সিদ্ধান্ত নেতা একাই গ্রহণ করেন, কর্মীদের মতামতের কোন গুরুত্ব থাকেনা, তাদেরকে প্রশ্নহীন ভাবে নেতার আদেশ পালন করতে হয়। 


স্বৈরাচারী ব্যবস্থাপনার সুবিধা: 

1) দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ:-   সমস্ত ক্ষমতা একজন ব্যক্তির হাতে থাকে ফলে যেকোনো বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। 

2) উচ্চ দক্ষতা ও শৃঙ্খলা :-  কর্মীরা প্রশ্নহীনভাবে নেতার  কঠোর নির্দেশ অনুসরণ করে , তাই কাজের ক্ষেত্রে উচ্চমান ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে।

3) অনভিজ্ঞদের জন্য সুবিধাজনক:-   যারা নতুন ও অনভিজ্ঞ কর্মচারী তাদের জন্য এই পদ্ধতিটি বিশেষ সাহায্যকারী। কারণ এখানে তারা তাদের কাজ সম্পর্কে নির্দিষ্ট নির্দেশনা পেয়ে থাকে যে কোন কাজ কিভাবে করতে হবে।

স্বৈরাচারী ব্যবস্থাপনার অসুবিধা: 

1) সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা হ্রাস :-  যখন কর্মীরা নিজেদের নতুন ধারণা বা কৌশল প্রয়োগের সুযোগ পায় না তখন তাদের সৃজন ক্ষমতা হ্রাস পায়। 

2) আগ্ৰহের অভাব ও অসন্তুষ্টি:-  কর্মীদের মতামত গুরুত্ব না পাওয়ায় তারা নিজেদেরকে অবহেলিত মনে করে তাদের কাজের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দেয়। 

3) যোগাযোগের অভাব:-  কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের কোন সুযোগ থাকে না যা অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।

3) democratic management ( গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা) : 

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় নেতা কর্মীদের সঙ্গে পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত এবং বিকেন্দ্রীভূত উভয় করেন। তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত অনুসরণ করেন এবং কর্মীদের চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেন। তিনি অধিনস্থ কর্মচারীদের পরামর্শ, অভিযোগ এবং মতামত মনোযোগ সহকারে শোনেন।


গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার সুবিধা: 

1) সৃজনশীলতার বিকাশ:-   গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নিজস্ব ধারনা ও মতামত প্রকাশের সুযোগ থাকে যা তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও সৃজনশীল ক্ষমতার বিকাশ ঘটায়। 

2) স্বীকৃতি ও উৎসাহদান:-  এই ধরনের ব্যবস্থাপনায় কর্মীকে তাদের সাফল্যের জন্য স্বীকৃতি ও উৎসাহ দেওয়া হয় যা তাদের কাজের প্রতি দায়িত্বশীল করে তোলে। 

3) অভিজ্ঞতার সঠিক ব্যবহার:-   এখানে নেতা দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীদের থেকে মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করে যা প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে সহায়তা করে।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার অসুবিধা:

1) সিদ্ধান্ত গ্রহণে‌ দেরি:-  গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় যহত সকলের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয় তাই কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বেশি সময় লাগে।

2) পারস্পরিক দোষারোপ:-   যেহেতু এখানে সকলে মিলে কোন সিদ্ধান্ত নেয় ,তাই কোন প্রকল্প বা কাজ ব্যর্থ হলে কেউ একা তার দায় নিতে চায় না সকলে একে অপরের উপর দোষারোপ করে যা দলের পারস্পরিক বিশ্বাসকে হ্রাস করে।

3) মতবিরোধ সৃষ্টি:-   এখানে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মানুষেরা মিলে সিদ্ধান্ত নেয় তাই অনেক সময় তাদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হতে পারে যা ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।


4) laissez Fair management (অবাধ ব্যবস্থাপনা) :

Liseez fare management বা অবাধ ব্যবস্থাপনা হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে নেতা কর্মীদের সমস্ত ক্ষমতা দিয়ে দেন। কর্মীরা নিজেরাই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেয় এবং নীতি নির্ধারণ করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে।


উদাহরণ:- কোন একটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের একটি প্রজেক্ট তৈরি করতে বললেন। বিষয় “ আমাদের কলেজের কতজন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার পথে যেতে চায় ” তোমাদের যা যা সরঞ্জাম প্রয়োজন আমি দেবো। শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো পরিকল্পনা ,কর্মী সংগঠন, সার্ভে প্রভৃতির মাধ্যমে প্রজেক্টটি সম্পন্ন করল।

এখানে শিক্ষক সরাসরি পড়ালেন না কোন ক্ষমতাও প্রয়োগ করলেন না সমস্ত ক্ষমতার শিক্ষার্থীদের অর্পণ করলেন , শুধুমাত্র সরবরাহকারী বা সহায়ক হিসেবে কাজ করলেন।

অবাধ ব্যবস্থাপনার সুবিধা: 

1) ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ:-   এই ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ দেখা যায় অর্থাৎ নেতা নিজে ক্ষমতার প্রয়োগ করেন না সমস্ত ক্ষমতা কর্মীদের হস্তান্তর করে দেন ।

2) উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা:-   কর্মীরা এখানে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পায়। ফলে তারা প্রথাগত চিন্তার বাইরে গিয়ে সৃজনাত্মক ও নতুন পথ খুঁজে বের করতে পারে।

3) নেতৃত্বে ক্ষমতার বিকাশ:-  এই ধরনের ব্যবস্থাপনায় কর্মীকে নিজে সমস্যা সমাধান ও সিদ্ধান্ত নিতে হয় যা তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার বিকাশ ঘটায় ও পেশাগত জীবনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। 

অবাধ ব্যবস্থাপনার অসুবিধা: 

1) অদক্ষ কর্মীদের জন্য অনুপযোগী:-   এই পদ্ধতি তখনই কার্যকর হবে যখন কর্মীরা দক্ষ ও অভিজ্ঞ হবে । যদি তাদের মধ্যে প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা না থাকে তবে তারা প্রতিষ্ঠানকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেনা।

2) কর্মীদের উপর নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা:-  নেতার হস্তক্ষেপ কম থাকায় অনেক সময় কর্মীদের কাজ পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়। 

3) গোপনীয়তা রক্ষায় সমস্যা:-   নেতার নিয়ন্ত্রণ কম থাকায় প্রতিষ্ঠানের গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলি সুরক্ষায় সমস্যা তৈরি হতে পারে। 


উপসংহার: সমস্ত আলোচনায় ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে কাউকে তো ব্যবস্থাপনার প্রত্যেকটি ধরনের নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে । সকল পদ্ধতি তার নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এবং নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।



 






Sign in to leave a comment
শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা বলতে কি বোঝ? এর বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো? Meaning  of educational management. Discuss the characteristics of educational management.